গ্রীষ্ম ঋতুচর্যা (বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ)
সম্ভাব্য রোগ: শক্তি হ্রাস, লু লাগা, উদরাময়, বমন, জ্বর, মাথাধরা, দাহবোধ ইত্যাদি।
পালনীয় বিধি:
- হাল্কা, সুপাচ্য ও তাজা আহার - মুগ, মসুর, দুধ, দই, ফলের রস, ঘোল, ছাতু, আনারস, লেবু, তরমুজ
- ডাবের জল খাওয়া
- সুতির ও খাদির হাল্কা পোশাক
- দিনে ঘুমানো (বিশ্রাম)
নিষিদ্ধ: গরম, ঝাল, লবণযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত রোদে যাওয়া, সিন্থেটিক পোশাক, পিপাসা রোধ না করা।
বর্ষা ঋতুচর্যা (আষাঢ় ও শ্রাবণ)
সম্ভাব্য রোগ: পাচন দুর্বলতা, শারীরিক দুর্বলতা, রক্তবিকার, বায়ু দোষ, কফ, বাত, কৃমি, জ্বর ইত্যাদি।
পালনীয় বিধি:
- অম্ল, লবণযুক্ত ও সুস্বাদু খাবার
- পুরানো চাল, যব, ঘি, দুধ
- কলা, বেগুন, করলা, লাউ, জিরা, মেথি, রসুন
- শুদ্ধ বা ফুটানো জল
নিষিদ্ধ: অতিরিক্ত ভাত, আলু, ঢেঁড়শ, বাসি খাবার, মাছ, দই, দিনে ঘুমানো, রাত্রি জাগরণ, খোলা জায়গায় ঘুমানো, শাক খাওয়া, রোদে যাওয়া। শ্রাবণে শাক, ভাদ্রে দই ও লাউ, আশ্বিনে দুধ।
শরৎ ঋতুচর্যা (ভাদ্র ও আশ্বিন)
সম্ভাব্য রোগ: পিত্ত প্রধান রোগ যেমন জ্বর, বমি, অম্লরোগ, শিরঃপীড়া, অরুচি ইত্যাদি।
পালনীয় বিধি:
- হাল্কা ও ঠাণ্ডা মিষ্টি খাবার
- করলা, মেথি, গাজর, নারিকেল, আঙ্গুর
- টমেটো, ফলের রস, ছোবড়া জাতীয় শাক
- তেল মালিশ, ব্যায়াম ও প্রাতঃভ্রমণ
নিষিদ্ধ: ময়দা জাতীয় দ্রব্য, ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার, চর্বি, তেল, দই, মাছ, মাংস, বেশি শশা ও দই-শশা একসাথে খাওয়া, দিবা নিদ্রা।
হেমন্ত ঋতুচর্যা (অগ্রহায়ণ ও পৌষ)
পালনীয় বিধি:
- মিষ্টি ও ঘি-তেলযুক্ত খাবার
- লাড্ডু, নতুন চাল, পুষ্টিকর আহার
- তেল মালিশ ও গরম জলে স্নান
- গরম বিছানা ও গাঢ় রঙের পোশাক
- মাথা, নাক, কান ও পায়ের তালুতে তেল
নিষিদ্ধ: শীতল বা বাতবর্ধক পদার্থ, দিবা নিদ্রা, খোলা পায়ে থাকা ও সাদা রঙের পোশাক।
শীত ঋতুচর্যা (পৌষ ও মাঘ)
পালনীয় বিধি:
- হরিতকি, আমলকি, দুধ, রৌদ্রসেবন
- তেল মালিশ, উষ্ণ স্নান
- হেমন্ত ঋতুর আহার অব্যাহত রাখা
নিষিদ্ধ: ঠাণ্ডা খাবার, সরবত ও ঠাণ্ডা পানীয়।
বসন্ত ঋতুচর্যা (ফাল্গুন ও চৈত্র)
পালনীয় বিধি:
- ঝাল, কষা, রসযুক্ত খাবার
- পরিশ্রম ও ব্যায়াম
- পুরানো চাল, মুগ, মসুর, ছোলা, ধনে
- তেল মালিশ
নিষিদ্ধ: নতুন চাল, মিষ্টি ও টক জাতীয় খাবার, দই, আলু, পেঁয়াজ, নতুন গুড়, মহিষের দুধ, দিনে ঘুমানো, এক স্থানে অধিক সময় বসে থাকা।
ঋতু সন্ধিকাল: প্রতিটি ঋতুর শেষ ও পরবর্তী ঋতুর শুরু মিলিয়ে ২ সপ্তাহের সময়ে ধীরে ধীরে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। এতে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা হয়।