পুষ্টি

পুষ্টির মৌলিক ধারণা

পুষ্টি হল সঠিক খাবার এবং পুষ্টি উপাদান গ্রহণের প্রক্রিয়া যা শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। সুষম আহার খাওয়া শরীরকে শক্তি প্রদান করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

প্রধান পুষ্টি উপাদান

আমিষ বা প্রোটিন - শরীরের কোষ এবং টিস্যু গঠন করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন - রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন।
ক্যালসিয়াম - হাড় ও দাঁত শক্তিশালী রাখে।
আয়রন - রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন এবং অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে।
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট - শরীরের প্রধান শক্তি উৎস।
তেল, ঘি, চর্বি (স্নেহজাতীয়) - শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন শোষণের জন্য প্রয়োজন।
বিভিন্ন প্রকারের খনিজ লবণ - শরীরের জলীয় ভারসাম্য বজায় রাখা এবং কোষের কার্যক্রমে সহায়তা করে।
জল - শরীরের সব কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য অপরিহার্য; তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং পুষ্টি পরিবহনে সহায়তা করে।

স্বাস্থ্যকর খাবারের টিপস

প্রতিদিন সুষম খাবার গ্রহণ করুন।
ফল এবং সবজি বেশি পরিমাণে খান।
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এড়িয়ে চলুন।
জল পান করুন, অন্তত ৮-১০ গ্লাস প্রতিদিন।
প্রোটিনের জন্য মাংস, মৎস্য, ডাল এবং দুধ খাওয়া উচিত।

বিভিন্ন ধরণের খাদ্য

১. শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট

কাজ: শরীরকে শক্তি যোগায়।

কোথায় পাওয়া যায়: চাল, গম, ভুট্টা, আলু, মিষ্টি আলু, চিনি, গুড়।

২. আমিষ বা প্রোটিন

কাজ: শরীরে কোষ এবং টিস্যু তৈরি ও মেরমত করে; মাংসপেশী, রক্ত, এনজাইম এবং অ্যান্টিবডি তৈরি করে।

কোথায় পাওয়া যায়: ছানা, দই, সোয়াবিন, ডাল, মাংস, মাছ, মেটে, ডিম।

৩. তেল/ঘি/চর্বি

কাজ: প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড যোগায়। ভিটামিন এ, ডি, ই কে শরীরে শোষণ হতে সাহায্য করে।

কোথায় পাওয়া যায়: মাখন, ঘি, বনস্পতি তেল, তৈলবীজ।

৪. ভিটামিন-A

কাজ: চোখ, চামড়া এবং মিউকাস মেমব্রেনকে সতেজ রাখা। কম আলোতে দেখতে সাহায্য করা।

কোথায় পাওয়া যায়: মাছের তেল, মেটে, দুধ, ঘি, হলুদ এবং লাল ফল, সবুজ শাক-সব্জি, গাজর, কুমড়ো, পাকা আম, পেঁপে।

৫. ভিটামিন-সি

কাজ: মাড়ি সুস্থ রাখতে, রোগ জীবাণু থেকে লড়ার ক্ষমতা প্রদান।

কোথায় পাওয়া যায়: আমলা, পেয়ারা, টকজাতীয় ফল, কাঁচা সব্জি ও ফল, পাতাযুক্ত শাকসব্জি, অঙ্কুরিত ডাল।

৬. ভিটামিন-ডি

কাজ: ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট শোষণে সাহায্য করে। দাঁতের স্বাভাবিক গঠনে সাহায্য করে।

কোথায় পাওয়া যায়: সূর্যের আলো, ঘি, মাখন, ডিমের কুসুম।

৭. ভিটামিন-বি (থায়ামিন)

কাজ: সাধারণ খিদে, হজমে, দৃষ্টিশক্তি সাহায্য এবং স্নায়ুর সুস্থতা। পরিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে।

কোথায় পাওয়া যায়: মেটে, ডিম, ডাল, বাদাম, শস্য জাতীয় খাবার, তৈলবীজ ইত্যাদি।

৮. আয়োডিন

কাজ: থাইরয়েড গ্লান্ডের থাইরোক্সিন হরমোন তৈরি। লোহিতকণিকা তৈরি, মানসিক বিকাশ।

কোথায় পাওয়া যায়: কাঁকড়া ও সমুদ্রের খাবার, আয়োডিনযুক্ত লবণ।

৯. আয়রন

কাজ: রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি ও বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন পৌঁছানো।

কোথায় পাওয়া যায়: ছোলা, গুড়, সবুজ শাক-সব্জি, খেজুর, ডাল/সয়াবিন, গম, মাংস।

পুষ্টির টিপ: সুষম খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত জল পান এবং নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য।